১৫ ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস কেন?
১৫ ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস।বাংলাদেশের
স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমানের ৪৩ তম শাহাদত বার্ষিকী। দিনটি বাঙালী
জাতির জন্য কলঙ্ক ও লজ্জাজনক। এই ঘটনা গোটা
বিশ্বের কাছে বাঙালী জাতির কালিমায় কলঙ্কের তিলক পড়িয়ে দেয়।
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক অভিন্ন সত্তা। দীর্ঘ একুশ বছর তিনি তার সংগ্রাম, দৃঢ়চেতা
ব্যক্তিত্ব, সততা, সারল্য এবং দূরদৃষ্টি দিয়ে অর্জন
করেছিলেন দল-মত নির্বিশেষে সকল বাঙালীর ভালবাসা, শ্রদ্ধা ও আস্তা।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর
যুদ্ধবিধ্বংস্ত বাংলাকে সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন বঙ্গবন্ধু।
কিন্তু পরাস্ত পাকিস্তানিবাহীনি ও বাঙলার গুটি কয়েক কুলাঙ্গার কুচক্রী মিলে ঘৃণ্য
চক্রান্ত করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগষ্ট কালরাতে ঘাতকরা
বঙ্গবন্ধুর বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত করে বাঙলার বুক।
পঁচাত্তের পনেরই আগষ্ট কালরাতে ঘাতকরা শুধু
বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারায়
বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, সন্তান শেখ
কামাল, শেখ জামাল ও ১০ বছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেলসহ পুত্রবধু সুলতানা কামাল
ও রোজি জামাল। বঙ্গবন্ধুর সহোদর পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা
শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত তার পুত্র আরিফ
ও কন্যা বেবী সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে যুবনেতা ও সাংবাদিক শেখ ফজলুল
হক মনি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, পৌত্র সুকান্ত
আব্দুল্লাহ বাবু, শহীদ সেরনিয়াবাত, আব্দুল নাঈম খান
রিন্টু ও বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদসহ
পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও আত্মীয়স্বজন।
দেশে না থাকার কারণে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল
বঙ্গবন্ধুর জ্যৈষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা ও কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা।
সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপদগামী, কুচক্রী,
ক্ষমতালিপ্সু
সদস্য সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র
শোকের ছায়া।
১৯৭৫ সালের হত্যাকান্ড ছিল একটি রাজনৈতিক হত্যাকান্ড দেশী-বিদেশী কোন একটি চক্র বা
গোষ্ঠী এসব সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা
করেছে।
সুদীর্ঘ ৩৫ বছর পর ১২ জন সেনা কর্মকর্তাকে
ফাঁসির আদেশ দেয় উচ্চ আদালত। এর মধ্যে ৫ জনকে
ফাঁসি দিয়ে বাঙালী জাতি একটু হলেও কলঙ্কের কালিমা মোচন করেছে।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর থেকে আওয়ামীলীগ ১৫ ই
আগষ্টকে জাতীয় শোক দিবস পালন করে আসছে।
১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার
নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ সরকার গঠনের পর ১৫ ই আগষ্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালনের
জন্য আইন প্রণয়ন করে এবং দিবসটিকে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করা হয়। এই দিন সরকারিভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখারও সিন্ধান্ত নেয়া হয়।
শুধু ১৫ ই আগষ্ট নয়,শোকার্ত বাঙালী
জাতির উচিত আগষ্ট মাসজুড়ে গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা বাঙালী জাতির এই
মহা নায়ককে।
গভীর শ্রদ্ধার সাথে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ ই আগষ্ট
যারা শাহাদত বরণ করেছে তাদের আত্তার মাগফেরাত কামনা করছি।
No comments