কি ভাবে সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণায় -যাওয়া যায়?
প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যের নীলাভূমি জাফলং। জাফলংয়ের শীতল ঝর্ণা সকলের কাছে পরিচিত। এবার ঘুরে আসতে পারেন জাফলংয়ের আরেক নয়নাভিরাম ঝর্ণায়।
খাসিয়াপল্লীর ভেতরে অবস্থিত সংগ্রামপুঞ্জি
নামের এই ঝর্ণার অপরূপ সৌন্দর্য এখনো লোকের অর্ন্তরালে।
জাফলংয়ের বল্লাঘাট এসে বাজার,বাজার
পেরোতেই পান ও সুপারি গাছের বিশাল বাগান। হঠাৎ দেখলে মনে হবে বন। খাসিয়াপল্লী গড়ে
উঠেছে এই বাগানের পাশেই। মাঝেমধ্যে দোতলা বাশেঁর খাসিয়াদের ঘরবাড়ি যেন প্রাকৃতিক
দৃশ্যটাকে আরো মনমুগ্ধকর করে তোলে। জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে মিনিট বিশেক এর পথ।
আপনি যদি প্রকৃতি প্রেমিক হন এবং প্রকৃতিকে আরো কাছ থেকে উপভোগ করতে চান তাহলে
জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা এই পথ টুকু হেঁটে যেতে পারেন। পায়ের
নিচে তপ্ত বালু এবং চারপাশের খাসিয়া বাগানের অপরূপ সৌর্ন্দয উপভোগ করতে করতে পৌঁছে
যাবেন সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণায়। সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণার অপরূপ সৌন্দর্য নিজের চোখে না
দেখলে বিশ্বাস করতে পারবেন না। সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণাকে মায়াবী ঝর্ণাও বলা হয়। এই
ঝর্ণার প্রতি ধাপে ধাপে সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে। যত ধাপ পেরোনো হয় ততই উপরে উঠার
ইচ্ছা হবে। একদম পাহাড়ের ওপর থেকে শুরু হওয়া জলপ্রপাতের বড় পাথরের কারণে প্রথমে
দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে,দুই ভাগ থেকে চার ভাগে এভাবে লম্বা, একটা সময় বিভিন্ন খন্ডে ভাগ হয়ে শেষ হয়েছে একটা ছোট
তীব্র, সুন্দর ঝর্ণার মধ্য দিয়ে। নিচের সেই ছোট
ঝর্ণায়ও একসঙ্গে পাঁচ-ছয় জন গোসল করা যায়। এ এক অপূর্ব দৃশ্য।
বড় বড় পাথর এমনভাবে ধাপে ধাপে সাজানো দেখে যেন
মনে হয় সিঁড়ি। পাথুরে ঝর্ণাবেষ্টিত এই সিঁড়ি বেয়ে উত্তেজনার বশে অনেকেই চলে যান
ঝর্ণার চূড়ায়। সংগ্রামপুঞ্জি
ঝর্ণার ৫ম ধাপটি তিন স্তর বিশিষ্ট। এই ধাপের পুরোটা পাথরের তৈরি। এই ধাপের পানির
স্রোত অনেক বেশি। ঝর্ণার প্রকৃত সৌন্দর্য এই ধাপেই ফুটে উঠে। সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণার
উৎপত্তি ভারতের মেগালয় রাজ্য থেকে।বাংলাদেশে ঝর্ণার নিচের অংশ। প্রকৃতির বিশালত্ব,
শান্তির অপার ও অপরুপ সৌন্দর্যে মনোমুগ্ধকর এই সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা।
এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে কখন সময় ফুরিয়ে যায় তা বুঝায় যায় না।
ব্যস্তময় জীবনে ব্যস্ততার কারণে প্রকৃতির কাছে
নিজেকে আত্মসমর্পণের সুযোগ হয়ে উঠে না। সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণায় যদি না আসেন, তাহলে
জাফলং ভ্রমণ অপূর্ণই থেকে যাবে।
যেভাবে যাবেন :-
ঢাকা থেকে বাসে অথবা ট্রেনে
সিলেট।সিলেট থেকে লোকাল বাস কিংবা লেগুনায় করে জাফলং বাজারে। মামার বাজারে নামিয়ে
দেবে। ওখান থেকে জাফলং জিরো পয়েন্টের দিকে হেঁটে যেতে হবে কিছুক্ষণ। মা
রেস্টুরেন্টের সামনে দিয়ে বাঁয়ে মোড় নিতে হবে।ওখান থেকে নৌকা দিয়ে সংগ্রামপুঞ্জি বাজার।
বাজারে কাউকে খাসিয়াপল্লী বাগান বললেই দেখিয়ে দেবে। বাগানের ভেতরের রাস্তা দিয়ে ১০
মিনিটের মতো হাঁটলে সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা।
( জাফলংয়ের পিয়াইন নদী পার হতে ভাড়া নৌকার
সাহায্য নিতে পারেন। নৌকায় পার হতে আনুমানিক ২০০-২৫০ টাকা নিবে। )
তো......কবে যাচ্ছেন সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণার
অসাধারণ সৌন্দর্যে ডুব দিতে?????
No comments