বিশ্ব বন দিবস।
আজ বিশ্ব বন
দিবস। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টন ১৯৭১ সালে তার ২৩ তম অধিবেশনে ২১ শে মার্চ বিশ্ব
বনায়ন দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, সেই থেকে ২১ শে মার্চ বিশ্ব বনায়ন বা বন দিবস
হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। বনের গুরুত্ব এবং বৃক্ষ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তোলার লক্ষ্যে
এ দিবস টি পালন করা হয়।
বনভূমি হল পৃথিবীর
প্রাণ। পৃথিবীকে মানুষের বাসযোগ্য রাখতে এবং পৃথিবীতে জীবের অস্থিত্ত রক্ষার জন্য বন
অপরিহার্য। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে পৃথিবীব্যাপী বনভূমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। অথচ
সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে বন মানুষের মৌলিক চাহিদা (জীববৈচিত্র সংরক্ষণ, বাস্তুসংস্থানের
ভারসাম্য ঠিক রাখা, দুর্যোগ মোকাবিলা, দারিদ্র্যবিমোচন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন) পূরণে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে আসছে।
একটি নিদির্ষ্ট
এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য সঠিকভাবে বজায় রাখার জন্য ৩০ শতাংশ বনভূমি থাকা আবশ্যক বলে
মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। অথচ বাংলাদেশে আয়তনের তুলনায় বনভূমির পরিমাণ মাত্র ১৪ শতাংশ। পৃথিবীব্যাপী
মানুষ বিভিন্নভাবে বনভূমি ধ্বংসের যজ্ঞে নেমেছে। পৃথিবীতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় এক শতাংশ
ক্রান্তীয় বনভূমি ধ্বংস করছে মানুষ। বিগত ৭০ বছরে পৃথিবীর মোট ক্রান্তীয় বনভূমির প্রায়
৫০ শতাংশ উজার হয়ে গেছে। বিপুল পরিমাণ বৃক্ষ নিধন ও শিল্পায়নের ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বনের
পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে আবহাওয়ার তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সৃষ্টি হচ্ছে ঝড়-জলোচ্ছাস। অন্যদিকে
মেরু অঞ্চলের বরফ গলে বাড়ছে সমুদ্রের পানির উচ্চতা, ফলে উপকূলীয় অঞ্চল পানিতে প্লাবিত
হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। জলবায়ুর
প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে বনের ভূমিকা অপরিসীম। বাংলাদেশ বনবিভাগ বন সম্পদ
সংরক্ষণের পাশাপাশি নতুন বন সৃষ্টির জন্য বেশ কিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে সামাজিক
বন ও বৃক্ষ রোপণ অন্যতম। তবে সরকারের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকেও এ ব্যাপারে সচেতন হতে
হবে। নাহলে সরকারের একার পক্ষে এই পৃথিবীকে সবুজ অরণ্য বানানো সম্ভব হবে না। এই পৃথিবীকে
সবুজ করতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
No comments